মধ্যবিত্তের প্রোটিনের জোগান দিতে ভারতের ডিম যাচ্ছে বাংলাদেশে, পদ্মার ইলিশ রফতানি নিষিদ্ধ করল ইউনূস সরকার

ইউনূসের সরকারের এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ যে আরও অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়বে এমটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়ুন...

মধ্যবিত্তের প্রোটিনের জোগান দিতে ভারতের  ডিম যাচ্ছে বাংলাদেশে,  পদ্মার ইলিশ রফতানি নিষিদ্ধ করল ইউনূস সরকার

ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: গত একমাসেরও বেশি সময় ধরে পদ্মাপারের দেশে চলছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। গদিচ্যুত হাসিনা প্রশাসন। মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বর্তমানে বাংলাদেশে চলছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবুও অব্যাহত রাজনৈতিক জটিলতা। বাংলাদেশের এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে সেদেশের জনগণের একাংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় ডাক দিয়েছে ভারত বয়কটের।

ভারতীয় পন্য বয়কট করতে হবে। পদ্মার ইলিশ যাবে না ভারতে। আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক টানাপোড়নের মধ্যে ইলিশ মাছ রফতানি নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিলো বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। পুজোর মুখে ভারতে ইলিশ রফতানি নিষিদ্ধ করল পড়শি দেশ। নোবেলজয়ী মুহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশের মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রকের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানিয়েছেন, এমনিতেই পদ্মার ইলিশের জোগানে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। দেশের অন্দরেই চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না। তাই অন্য দেশে পদ্মার ইলিশ রফতানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। 

সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের পর থেকেই ওপার বাংলা থেকে ইলিশ মাছ আসে। পশ্চিমবঙ্গে ডায়মণ্ড হারবার, দিঘা থেকে যথেষ্ট পরিমাণ ইলিশের জোগান থাকলেও এপার বাংলার বাঙালিদের কাছে পদ্মার ইলিশের একটা চাহিদা থেকেই যায়। সেই চাহিদা মেটাতে বুধবার ফিস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন দুর্গাপুজোর সময় বাংলাদেশ সরকারের কাছে ইলিশ রফতানি করার জন্য আবেদন জানায়। যদিও ইলিশ রফতানি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের এই সিদ্ধান্তে হতাশ দুই দেশের মাছ আমদানি-রফতানিকারক ব্যবসায়ীরা। কারণ, ভারতে পুজোর সময় ইলিশ রফতানি করলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয় বাংলাদেশের।

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/RG-Kar-Junior-Doctors-Protest-on-go-back-slogan-while-bjp-mla-agnimitra-Paul-come-their-places

ইউনূসের সরকারের এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ যে আরও অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়বে এমটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। এদিন ফিস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে চিঠিতে লেখে, "১৯৯৬ সাল থেকে বাংলাদেশ ইলিশ রফতানি করছে এপার বাংলায়। পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে প্রতি বছর গড়ে ৫০০০ মেট্রিক টন ইলিশ আমদানি করা হত। দুর্ভাগ্যবশত ২০১২ সালের জুলাই মাসে হঠাৎ করেই বাংলাদেশ সরকার ইলিশ রফতানি নিষিদ্ধ করে। তারপর আমরা নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার জন্য তাদের কাছে চিঠি দিয়েছি কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তবে গত ৫ বছর ধরে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ থেকে শুরু করে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ পর্যন্ত ইলিশ আমদানি করা হয়।" এই আবেদন করা হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের কাছে।

অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মকসুদ বলেন, "এর আগে বাংলাদেশ সরকার দুর্গাপুজোর সময় ইলিশ মাছ রফতানির অনুমতি দিয়েছে। বিগত ৫ বছর ধরে ইলিশ আসছে এখানে। পশ্চিমবঙ্গ, আসাম এবং ত্রিপুরার মাছ ব্যবসায়ীদের কাছে বাংলাদেশের ইলিশের প্রচুর চাহিদা। মানুষও এই সময় ইলিশের জন্য অপেক্ষা করে থাকে। দুর্গাপুজোর সময় ইলিশ মাছ রফতানির অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি।" অ্যাসোসিয়শনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ এসেছে ৫০০ মেট্রিক টন।

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/Junior-doctor-protest-continue-on-RG-Kar-issue-in-front-of-Swasthya-Bhawan

তারপরের বছর ২০২০ সালে ইলিশ আমদানি করা হয়েছে ১৮৫০ মেট্রিক টন। ২০২১ সালে ২৬০০ টনের অনুমোদন থাকলেও আমদানি হয়েছে ১২০০ মেট্রিক টন। তার পরের দু'বছর ২০২২ ও ২০২৩ সালে আমাদানিকৃত ইলিশের পরিমাণ ছিল ১৩০০ মেট্রিক টন। যদিও আমদানির অনুমতি ছিল আরও কিছুটা বেশি। তবে চলতি বছরের শুরু থেকে কোটা বিরোধী আন্দোলনের জেরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দেশ ছেড়ে আপাতত ভারতেই আশ্রয় নিয়েছে সেদেশের পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  এমনকি বাংলাদেশ সরকার ইলিশ রফতানি বন্ধ করলেও, ভারত কম দামে ঢাকাকে ডিম সরবরাহ করছে। বাংলাদেশে ডিমের আকাল দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের ৫০ লক্ষ ডিম সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। ইতিমধ্যেই পেট্রাপোল হয়ে ২.৫ লক্ষ ডিম পৌঁছেছে বাংলাদেশে।