Durga Puja 2024: ১৪ দিন আগেই তোপধ্বনি দিয়ে শুরু উমা আরাধনা, আজও অমলিন মল্লরাজাদের মৃন্ময়ী দূুর্গাপুজো

১৯তম মল্লরাজ জগৎমল্ল ৯৯৭ খ্রীষ্টাব্দে প্রাচীন মল্ল রাজধানী প্রদ্যুম্নপুর থেকে শিকারে বেরিয়ে পথ ভুলে বন বিষ্ণুপুরে এসে পড়েন। আজ যেখানে দেবী মৃন্ময়ীর মন্দির ঠিক সেখানেই বিভিন্ন দৈব ঘটনার সম্মুখীন হয়ে দেবীর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। জানুন বিস্তারিত...

Durga Puja 2024: ১৪ দিন আগেই তোপধ্বনি দিয়ে শুরু উমা আরাধনা, আজও অমলিন মল্লরাজাদের মৃন্ময়ী দূুর্গাপুজো

সঞ্জীব মল্লিক, বিষ্ণুপুর: ১০২৮ বছর পেরিয়েও অমলিন বিষ্ণুপুর রাজবাড়ির পুজো। তিন তোপ ধ্বনির মধ্য দিয়ে হাজার বছরের প্রাচীন রীতি মেনে বৃহস্পতিবার থেকে বিষ্ণুপুরে শুরু হয়ে গেল মৃন্ময়ীর পুজো। বাংলায় পুজো আসতে এখনও সপ্তাহ দুই দেরি। কিন্তু তার আগেই বাঁকুড়ার প্রাচীন মল্ল রাজধানী বিষ্ণুপুরের রাজবাড়িতে ধুমধাম সহযোগে শুরু হয়ে গেল দেবী মৃন্ময়ীর পুজো। স্থানীয় মাধব সায়েরে স্নান করিয়ে বড় ঠাকুরানীকে নিয়ে আসা হল মন্দিরে। দেবীর আগমনের নির্ঘন্ট সূচিত হল মুহুর্মুহু কামানের শব্দে। ১০২৮ বছরের প্রাচীন পুজো শুরু হতেই আবেগে ভাসলেন প্রাচীন মল্লগড়ের আপামর মানুষজন। 

কথিত আছে, ১৯তম মল্লরাজ জগৎমল্ল ৯৯৭ খ্রীষ্টাব্দে প্রাচীন মল্ল রাজধানী প্রদ্যুম্নপুর থেকে শিকারে বেরিয়ে পথ ভুলে বন বিষ্ণুপুরে এসে পড়েন। আজ যেখানে দেবী মৃন্ময়ীর মন্দির ঠিক সেখানেই বিভিন্ন দৈব ঘটনার সম্মুখীন হয়ে দেবীর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে মল্ল রাজত্ব প্রদ্যুম্নপুর থেকে সরিয়ে আনা হয় বিষ্ণুপুরে। মন্দির প্রতিষ্ঠার পর থেকে মহাসমারোহে দেবী মৃন্ময়ীর পুজো শুরু করেন জগৎমল্ল। কথিত আছে, প্রথম দিকে শাক্ত মতে এই পুজো শুরু করেন মল্ল রাজারা। স্বাভাবিক ভাবে সে সময় এই পুজোয় চালু ছিল বলিদান প্রথা। কথিত আছে এই পুজোয় নরবলিরও প্রথা ছিল। পরবর্তীতে বিষ্ণুপুর রাজ পরিবার বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত হলে পুজোর আচারে কিছু বদল আসে।

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/Bashirhat-TMC-MP-Hazi-Nurul-islam-pass-away-on-today                                 

বলিদান প্রথা বন্ধ হয়ে শব্দকে ব্রহ্ম জ্ঞান করে শুরু হয় তোপধ্বনি প্রথা। তারপর থেকে শতকের পর শতক ধরে দেবী মৃন্ময়ীর পুজোর প্রতিটি নির্ঘন্ট ঘোষিত হতে থাকে তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে। ১০২৮ বছরের সেই প্রাচীন রীতি আজও অব্যাহত মল্লগড় বিষ্ণুপুরে। আজও প্রাচীন রীতি মেনে জীতাষ্টমীর পরের দিন স্থানীয় গোপাল সায়েরের পাড় থেকে মুহুর্মুহু গর্জে উঠল কামান। গোপাল সায়েরে একপ্রস্থ পুজো পাঠ সেরে দেবীরই এক রূপ বড় ঠাকুরানীকে নিয়ে আসা হয় মন্দিরে। 

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/Roy-Chowdhury-family-in-Baruipur-blows-away-nilkontho-bird-after-immersion-of-Durga-idol

এরপর মান চতুর্থীর দিন একইভাবে মন্দিরে আনা হবে মেজ ঠাকুরানীকে। সবশেষে ষষ্ঠীর দিন মন্দিরে আনা হবে ছোট ঠাকুরানীকে। অষ্টমীর দিন মন্দিরে পূজিতা হবেন খচ্চরবাহিনী বা মহামারীর। প্রাচীন রীতি ও আচার নিয়ম অটুট থাকলেও রাজত্ব হারানোয় মল্ল রাজ পরিবারের এই পুজোর জেল্লা কিছুটা ম্লান হয়েছে ঠিকই। কিন্তু এতটুকুও ভাটা পড়েনি মল্লগড় বিষ্ণুপুরের মানুষের আবেগে। বৃহস্পতিবার বড় ঠাকুরানীর আগমনের মূহুর্তে স্বাভাবিক ভাবেই মল্লগড়ের মানুষ ভিড় জমালেন হাজার বছরের প্রাচীন মল্ল রাজকূলদেবী মৃন্ময়ীর মন্দিরে। পুজো শুরুর সপ্তাহ দুই আগেই পুজোর উন্মাদনায় মাতলেন প্রাচীন মল্লগড়ের আট থেকে আশি।