OMR শিট উদ্ধারে যেকোনও সংস্থার সাহায্য নিতে পারবে সিবিআই, জানাল হাইকোর্ট

আগামী ৭ সপ্তাহ পর মামলার পরবর্তী শুনানি। তার মধ্যে সিবিআইকে আদালতের এই নির্দেশ কার্যকরের অগ্রগতি রিপোর্ট জমা দিতে হবে আদালতে।

OMR শিট উদ্ধারে যেকোনও সংস্থার সাহায্য নিতে পারবে সিবিআই, জানাল হাইকোর্ট
file image

রিমিক মাঝি, কলকাতা: ২০১৪ সালে প্রাথমিকে নিয়োগের পরীক্ষায় ওএমআর শিট ও সার্ভার দুর্নীতির শেষ দেখতে সিবিআইকে অলআইট ঝাঁপানোর নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। প্রয়োজনে দেশের যে কোনও সরকারি বা বেসরকারি আইটি সংস্থার বিশেষজ্ঞ এমনকি বিদেশি সংস্থা ও এথিক্যাল হ্যাকারদের সাহায্য নেওয়ার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। 

তার সমস্ত খরচ বহন করতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং রাজ্য সরকারকে। যেকোনো মূল্যে সার্ভারের আসল তথ্য খুঁজে বার করতে সিবিআইকে নির্দেশ হাইকোর্টের। আগামী ৭ সপ্তাহ পর মামলার পরবর্তী শুনানি। তার মধ্যে সিবিআইকে (CBI) আদালতের এই নির্দেশ কার্যকরের অগ্রগতি রিপোর্ট জমা দিতে হবে আদালতে। নির্দেশ বিচারপতি মান্থার। 

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/Three-men-tried-to-loot-and-fired-one-round-bullets-in-a-house-Lake-Avenue-Road-of-Kolkata

নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কয়েকবছর ধরে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। ইতিমধ্যেই আদালতে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। গত মঙ্গলবারের শুনানিতে প্রাথমিকের নিয়োগে ওএমআর শিট সংক্রান্ত মামলায় সিবিআইয়ের কাছে অরিজিনাল সার্ভার বা হার্ড ডিস্কের তথ্য চেয়েছিল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, ওএমআর শিট স্ক্যান করে কোথায়, কোন হার্ড ডিস্কে রাখা হয়েছিল, শুক্রবার আদালতের কাছে সেই বিষয়ে তথ্য জমা দিতে হবে সিবিআইকে। কিন্তু শুক্রবার সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়, তারা ওই তথ্য জমা দিতে পারছে না। মঙ্গলবার আদালতে ওএমআর শিট নিয়ে রিপোর্ট জমা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে ওই রিপোর্টে সন্তুষ্ট হয়নি উচ্চ আদালত। 

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/Special-Security-of-Ledies-Special-Train-order-to-Calcutta-High-Court

তারপরই বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশে বলেন, সিবিআই সার্ভারের মূল তথ্য উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছে। পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তের বিশেষজ্ঞদের শরণাপন্ন হতে পারবে সিবিআই। উইমার্স সিটের আসল তথ্য উদ্ধারে এবার প্রয়োজনে সিবিআই সরকারি ও বেসরকারি তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার সাহায্য নিতে পারে। আদালতের বক্তব্য, আইবিএম, WIPRO, TCS বা যে কোনও বেসরকারি আইটি সংস্থার সাহায্য নিক সিবিআই। একইসঙ্গে সরকারি কোনও সংস্থা, বিদেশের কোনও এথিক্যাল হ্যাকারের সহযোগিতাও নিতে পারবে সিবিআই। এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ দিতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং রাজ্য সরকারকে। বিচারপতি মান্থার পর্যবেক্ষণ, এই মামলায় ওএমআর শিটের তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তা উদ্ধার করা জরুরি। 

এদিন শুনানিতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা সিবিআই-এর আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, 'প্রয়োজনে একটা সরকারি সংস্থা, অন্য একটা বেসরকারি আইটি সংস্থার সাহায্য নিন। কারণ টেকনিক্যাল ব্যাপারটা নিয়ে নিশ্চিত না হয়ে আদালত আইনি পদক্ষেপ করতে চাইছে না। প্রথম সার্ভারের কপি কতবার ট্রান্সফার হয়েছে? তথ্য কি এডিট হয়েছে? হলে কতবার? এর সন্তোষজনক নিশ্চিত জবাব পেতে চায় আদালত। তারপরই আদালত এ ব্যাপারে কোনও আইনি পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিতে পারবে।'

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/High-Court-reprimands-the-police-over-the-allegation-of-release-the-criminal

২০১৪ সালে প্রাথমিকে নিয়োগের পরীক্ষার আসল ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছে বলে হাইকোর্টে আগেই জানিয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। তাদের বক্তব্য ছিল, আসল প্রতিলিপি নষ্ট করা হলেও পরিবর্তে তার ডিজিটাইজড ডেটা রয়েছে। পরীক্ষার্থীদের ওএমআর শিট বা উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি নামের একটি বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তারাই ওএমআর শিট স্ক্যান করেছে। 

এর আগে ওএমআর শিট সংক্রান্ত এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তার পর এই মামলায় সিবিআইয়ের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিলেন বিচারপতি মান্থা। শুক্রবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জমা দেওয়া রিপোর্ট দেখে খুশি না হয়ে ওএমআর শিট ও সার্ভার দুর্নীতির কিনারা করতে সিবিআইকে অল আউট ঝাঁপাতে নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।