Historical Kali Puja: দেবীর ভয়ে পালিয়েছিল বর্গী সেনাও, জানুন কালীক্ষেত্রর মাই-ত কালীপুজোর ইতিহাস

প্রায় ৪০০ বছরের প্রাচীন এই মা-ই তো কালী পুজো। এই নামকরণেও রয়েছে ইতিহাস। বিস্তারিত জানুন...

Historical Kali Puja: দেবীর ভয়ে পালিয়েছিল বর্গী সেনাও, জানুন কালীক্ষেত্রর মাই-ত কালীপুজোর ইতিহাস
মাইত কালী মন্দির

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: মারাঠা  সম্রাট ভাস্কর পন্ডিতের দেওয়া খড়গ আজও মাইত কালীর পাশে পূজিত হন সোনামুখীতে। তিনিই কালীর নামকরণ করেছেন 'মাইত কালী'। আজও 'মাইত কালী' নামেই পুজো হয়ে আসছে সোনামুখীর অন্যতম কালী। বাঁকুড়া জেলার প্রাচীন পৌরশহর সোনামুখী গোটা জেলার কালীক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত। এখানে ছোটো-বড় মিলিয়ে প্রায় আড়াইশো কালী পুজো হয়। 

এখানকার প্রাচীণ কালী পুজোগুলিকে নিয়ে নানান লোককথা প্রচলিত আছে। সেগুলির মধ্যে অন্যতম হল, এই  'মাইত কালী'। এই কালীপুজোটি এখানকার সবচেয়ে জনপ্রিয় কালীপুজোগুলির মধ্যে একটি। কালীপুজোর দিন সোনামুখীর বিভিন্ন স্থানে কালী মন্দিরগুলিতে ভক্তদের ভিড় থাকে। ভক্তরা মনোস্কামনা পূরণের আশায় কালী মা-কে পুজো দেন। সোনামুখীর কালীপুজোয় দূর-দূরান্ত থেকেও ভক্তরা আসেন। বহু ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে এই মাইত কালীর পুজোয়।

প্রায় ৪০০ বছরের প্রাচীন এই মাইত কালীর পুজো। এই নামকরণেও রয়েছে ইতিহাস। ইংরেজি সাল ১৭৪২ ও বাংলা ১১৪৯ সালে মারাঠা সেনাপতি ভাস্করপন্ডিত বর্গীদের একটি দলসহ বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থেকে সোনামুখিতে যায় লুঠপাট করার জন্য বাদ্যভাণ্ডসহ 'হর হর বোম বোম' শব্দ করতে করতে। সোনামুখির রানিরবাজার এলাকায় মা কালীর মন্দিরের সামনে বর্গীদস্যুদল সমবেত হয় লুঠতরাজের জন্য। এই এলাকার চারদিক তখন গাছপালায় ভরা ছিল। তারই মধ্যে ছিল কালীর মন্দির। দিনের বেলাতেই অনেকে ভয়ে মন্দিরের সামনে আসতে সাহস করতো না। বিকেল গড়িয়ে সন্ধের মুখ। এই অঞ্চলের মানুষজন সকলে বর্গী দস্যুদের ভয়ে বাইরে বেরোননি। 

শুনশান চারপাশ। হঠাৎ বর্গী দস্যুদল বাজনা বাজাতে বাজাতে নাচতে লাগলো। তখন এক বৃদ্ধ সাহস করে সন্ধ্যায় দেবীমন্দিরে আলো দেওয়ার জন্য একটি প্রদীপ নিয়ে মন্দিরে ঘটের সামনে রেখে বলিস্থানে হাড়িকাঠের সামনে প্রণাম করছিলেন। এমন সময় বর্গীদলের সর্দার একটি খাঁড়া উঠিয়ে প্রণামরত বৃদ্ধকে বলি দিতে উদ্যত হয়। কিন্তু কোনওভাবেই বৃদ্ধকে বলি দিতে পারেনি বর্গীর দল। কথিত আছে খাঁড়া নামানো যায়নি। উপরন্তু বর্গীদের সর্দার অন্ধও হয়ে যান। পরে ওই বৃদ্ধের চেষ্টাতেই সর্দার দৃষ্টি শক্তি ফিরে পান।

এই সময় বর্গীদল বলে তারা আর লুঠপাট করবে না। এরপরেই বাজনা বাজাতে বাজাতে " মায়ী-ত কালী হ্যায়, মায়ী-ত কালী হ্যায়" বলতে বলতে সোনামুখি ছেড়ে চলে যায় বর্গীদল। এরপর সেই খড়গ তিনি কালী মূর্তিকে দিয়ে যান ,সেই থেকে আজও কালীর সঙ্গে সঙ্গে তার দেওয়া খড়গ-ও পূজিত হয়। তখন থেকেই এই কালীর নাম হয় " মাই- তো- কালী "। প্রতিদিনই হয় পুজো প্রথা মেনে। কালীপুজোর সময় পাঁচদিন ধরে চলে পুজো আড়ম্বরের সঙ্গে। একসময় বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের পারিবারিক পুজো হলেও এখন এই পুজো সকলের।