আদিবাসী বনধে মিশ্র প্রভাব জেলায়-জেলায়, দিনভর ভোগান্তিতে আমজনতা

সংস্কৃতি, ভাষা, বিভিন্ন পরব কোনও কিছুরই মিল নেই কুড়মিদের সঙ্গে তাঁদের। সেই কারণেই সি আর আই থেকে অনুমোদন পাইনি তারা।

আদিবাসী বনধে মিশ্র প্রভাব জেলায়-জেলায়, দিনভর ভোগান্তিতে আমজনতা
(ফাইল চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: ইউনাইটেড ফোরাম অফ অল আদিবাসী অর্গানাইজেশনের ডাকে ১২ ঘন্টা বাংলা বনধের মিশ্র প্রভাব জেলাজুড়ে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট সহ গঙ্গারামপুর, হরিরামপুর, কুশমন্ডি, পতিরামে পিকেটিং করে বনধ পালন সমর্থনকারীদের। এদিন সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে বনধ পালিত হলেও দুপুর গড়াতেই গঙ্গারামপুরের বিভিন্ন জায়গায় বনধ সমর্থনকারীদের সঙ্গে বাইক আরোহীদের বিক্ষিপ্ত অশান্তি বাধে। 

এদিন গঙ্গারামপুরের PWD অফিস সংলগ্ন ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর এক বাইক আরোহীকে বাইক থেকে ফেলে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠে বনধ সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ঘটনার পরই গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত বাইক আরোহীকে ঘটনাস্থল থেকে গঙ্গারামপুর হাসপাতালে নিয়ে যায়। জানা গিয়েছে, আহত বাইক আরোহীর নাম গৌরাঙ্গ রাজবংশী। সে তার মায়ের জন্য হাসপাতালে ওষুধ আনতে যাচ্ছিলেন। আর ঠিক সেই সময়ই তার উপরে এমন হামলা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। সেই ঘটনা ঘটার পরপরই কালিতলা এলাকায় সংবাদমাধ্যমের কর্মীর গাড়ি ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত বনধ সমর্থনকারীরা বলে অভিযোগ। যদিও এই ঘটনার পর আদিবাসী সংগঠনের নেতা সিদান মুর্মু জানান, এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি। 

অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার আদিবাসী সংগঠনের পক্ষ থেকে সারা বাংলায় ১২ ঘণ্টার বনধের ডাক দেওয়া হয়েছিল। এদিন সকাল থেকেই সিউড়ি বাঁকুড়া সহ বিভিন্ন জায়গায় সে চিত্র দেখা যায়। তবে বাদ নেই নদীয়ার আদিবাসী মঞ্চও। তারা জানান, রাজ্যের ১৪টি আদিবাসী সংগঠন মিলে তৈরি করা হয়েছে ইউনাইটেড ফোরাম অফ অল আদিবাসী সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি দাওয়ার মধ্যে প্রধান যে বিষয়টি উঠে এসেছে তা হল, কুড়মি মাহাতোরা সম্প্রতি আদিবাসী সম্প্রদায়কভুক্ত হওয়ার জন্য যে আন্দোলন করছে, তা তারা করতেই পারেন, তবে তা ভিত্তিহীন। কারণ, আদিবাসীদের ইতিহাসে তাদের অস্তিত্ব পাওয়া যায় না।

সংস্কৃতি, ভাষা, বিভিন্ন পরব কোনও কিছুরই মিল নেই কুড়মিদের সঙ্গে তাঁদের। সেই কারণেই সি আর আই থেকে অনুমোদন পাইনি তারা, তবে নিয়ম পরিবর্তন করে যদি তাদের ঢোকানোর যে অপচেষ্টা করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধেই এই প্রতিবাদ বলে জানানো হয়। বৃহস্পতিবার নদীয়ার হরিণঘাটা থানার কল্যাণী মোড় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে, আদিবাসী মঞ্চের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ দেখানো হয়। আদিবাসীদের অন্যান্য দুই একটি সংগঠনের শতাধিক কর্মীরা এই বিক্ষোভে শামিল হন। সম্প্রতি রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানান তারা। এ প্রসঙ্গে আন্দোলনকারীরা বলেন, ''মন্ত্রিত্ব বড় কথা নয়, সবচেয়ে বড় কথা হল সে আদিবাসী ঘরের মেয়ে।''