ছোটোখাটো উইক এন্ডের সেরা ঠিকানা টাকি, পর্যটকদের জন্য ঢেলে সাজছে ইছামতীর পারের এই শহর

রায়চৌধুরী, মুন্সি, টাকি পুবের বাড়ি সহ একাধিক জমিদার বাড়ি রয়েছে এই প্রাচীন সীমান্ত শহর টাকিতে। এখানকার বেশিরভাগ জমিদার বাড়িতেই আড়াইশো থেকে তিনশো বছর ধরে সাড়ম্বরে পালিত হয়ে আসছে মৃন্ময়ীর আরাধনা।

ছোটোখাটো  উইক এন্ডের  সেরা ঠিকানা টাকি, পর্যটকদের জন্য ঢেলে সাজছে ইছামতীর পারের এই শহর
সরজমিনে টাকি পরিদর্শন প্রশাসনের আধিকারিকদের (নিজস্ব চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: 'টাকি'! দুই অক্ষরের এই জায়গাটির নাম শুনলে প্রথমেই যে কথাটি মনে পড়ে তা হল, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ইছামতী নদীর কোলে ছোট্ট এক চিলতে শহর। রায়চৌধুরী, মুন্সি, টাকি পুবের বাড়ি সহ একাধিক জমিদার বাড়ি রয়েছে এই প্রাচীন সীমান্ত শহর টাকিতে। এখানকার বেশিরভাগ জমিদার বাড়িতেই আড়াইশো থেকে তিনশো বছর ধরে সাড়ম্বরে পালিত হয়ে আসছে মৃন্ময়ীর আরাধনা। তার মধ্যে অন্যতম হল টাকি জোড়া মন্দির পাড়ার মুখার্জি পরিবারের পুজো। এছাড়াও ইছামতীকে ঘিরে দুই বাংলার দুর্গাপুজোর বিসর্জনের ছবিও বেশ জনপ্রিয় পর্যটকদের কাছে। 

বহুদিন ধরেই ভ্রমণ পিপাসু মানুষজনদের কাছে উইকএন্ডে শর্ট টাইমের গন্তব্য হল North 24 Parganas-র টাকি শহর। ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের খুব কাছে অবস্থিত 'টাকি' হল পর্যটনের নতুন ডেস্টিনেশন। আর সেই কারনেই এই শহরকে পর্যটকদের কাছে আরও বেশি জনপ্রিয় করে তুলতে ডিপ ফরেস্ট হরিনালয়, ট্রি হাউস থেকে ওয়াটার স্পোর্টস সরকারি রিসোর্ট নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার। 
 

শনিবার টাকিকে নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনা সরজমিনে দেখতে আসেন পর্যটন সচিব ও জেলা শাসক। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের সাত দিনের মধ্যেই রাজ্য সরকারের আধিকারিকরা খাস জমি দেখতে সরেজমিনে টাকিতে। পর্যটনের নব দিগন্তের প্রজেক্ট তৈরি করল পর্যটন দফতর।উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের টাকি পুরসভার ভারত বাংলাদেশ টাকি পর্যটনের নয়া দিগন্ত ইতিমধ্যে টাকি ভারতবর্ষ তথা বিশ্বের দরবারে পর্যটনের মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে।

পর্যটনকে আরও আধুনিকরণ উন্নত করতে এগিয়ে এসেছে রাজ্য সরকার। ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুন্দরবন সফরে এসে সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্রকে আরও বেশি আকর্ষণীয় গড়ে তুলতে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। এবার টাকি শহরকেও পর্যটনের মানচিত্রে আরও সুন্দর করে জায়গা করে দিতে এদিন টাকিতে আসেন রাজ্য পর্যটন কেন্দ্রের সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা শাসক শরৎকুমার দ্বিবেদী। উত্তর ২৪ পরগনা অতিরিক্ত জেলা শাসক প্রীতি গোয়েল এবং বসিরহাটের দক্ষিণের বিধায়ক সপ্তসি বন্দোপাধ্যায়। এছাড়াও ছিলেন টাকি পৌরসভার চেয়ারম্যান সোমনাথ মুখোপাধ্যায়। 

 উল্লেখ্য,  গত ৮ অগাস্ট নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী Mamata Banerjee  মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে, কোথায় কোথায় সরকারি জমি আছে? এবং উদ্ধার হয়েছে কিনা। কেন সরকারি জমি দখল হয়ে যাচ্ছে তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এরপর সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই নির্দেশ মেনে পর্যটন দফতরের আধিকারিকরা এদিন টাকিতে সরজমিনে সরকারি খাস জমি দেখতে আসেন। আর সেখানেই নতুন করে টাকিতে একটা পর্যটনের প্রজেক্ট তৈরি করার কথা জানান প্রশাসনিক আধিকারিকরা। বসিরহাটের দক্ষিণের বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ''মুখ্যমন্ত্রী গত বছরে সুন্দরবন সফরে এসে টাকিকে নতুন পর্যটনের ডেস্টিনেশনের কথা বলেছিলেন। আরও বেশি উন্নয়ন করতে সেই কথা মেনে পর্যটনের আধিকারিকরা আমরা মিলে সবাই সরজমিনের সুন্দরবন সহ রাজবাড়ী একাধিক জায়গা ঘুরে দেখেছি। তার একটা প্রজেক্ট তৈরি হয়েছে, খুব শীঘ্রই সেই কাজ শুরু হবে।''