মীন ধরতে ঘণ্টার পর ঘণ্টার নদীতে, সুন্দরবনের মহিলাদের মধ্যে বাড়ছে চর্মরোগ

সুন্দরবনে আছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ একক ম্যানগ্রোভ অরণ্যভূমি অঞ্চল। যে অরণ্যভূমি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বিচরণভূমি। নদী, খাল, খাঁড়িগুলিতে আছে কুমির-সহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণী।

মীন ধরতে ঘণ্টার পর ঘণ্টার নদীতে, সুন্দরবনের মহিলাদের মধ্যে বাড়ছে চর্মরোগ
(ফাইল চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: সুন্দরবনে নদী খাল বিলের শেষ নেই। আর এই নদী খালবিলই এখানকার মানুষের উপার্জনের অন্যতম উৎস। এই নদী খালবিলে মাছ কাঁকড়া ধরেই দিন চলে এখানকার বাসিন্দাদের। মীন ধরতে সুন্দরবনের মহিলাদের দীর্ঘক্ষণ থাকতে হয় নদীতে। দীর্ঘক্ষণ নদীতে থাকার ফলেই চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ছে এখানকার মহিলাদের মধ্যে।

সুন্দরবনে আছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ একক ম্যানগ্রোভ অরণ্যভূমি অঞ্চল। যে অরণ্যভূমি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বিচরণভূমি। নদী, খাল, খাঁড়িগুলিতে আছে কুমির-সহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণী। স্বামীরা যখন জঙ্গলে বা নদীতে মাছ ধরতে যান, সংসার সামলে বাড়ির বউরা যান রায়মঙ্গলে। মীন সংগ্রহে। শুধু রায়মঙ্গল নয়, সন্দেশখালির কলাগাছি, বেতনি, ডাসা সহ একাধিক নদীতে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ মীন ধরেন। 

বিশেষত মহিলারা মীন ধরতে নেমে পড়েন। তবে এই কাজ এক-দুদিনের  জন্য নয়। এই ছবি রোজকার। জোয়ার থেকে যখন নদীতে ভাটা লাগে, মীন ধরতে নেমে পড়েন দল বেঁধে। সঙ্গে বাঁশের চটার ফ্রেমে ঘন মশারির নেট লাগানো টানা জাল আর একটা অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ি। নদীতে কুমির বা কামোটের ভয় থাকে কিন্তু সংসারের ভাটা পড়তে দেওয়া যাবে না। যার জন্যই নদীর ভাটা শুরু থেকে জোয়ার পর্যন্ত টানা জলে থেকে চলে মীন সংগ্রহ। জোয়ার এলে আবার উঠে পড়া। আবার ভাটা শুরু হলে নদীতে নামা। দীর্ঘদিন ধরে এইভাবে অনেকটা সময় টানা জলে থাকার জন্য সুন্দরবনের মহিলারা একাধিক রোগের শিকার। দিনে নদীর নোনা জলে ছয়-সাত ঘণ্টা করে থাকার ফলে বাড়ছে চর্মরোগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রোগ। দেখা দিচ্ছে অন্যান্য অসুখও। সব মিলিয়ে চরম সমস্যায় পড়েছেন সুন্দরবনের নদী পাড়ের মহিলারা।