টাকার বদলে গাড়ির বেপরোয়া দৌরাত্ম্যে ছাড়, সাতের খুদের মৃত্যুতে কাঠগড়ায় Traffic Police

মাটি বোঝাই লরির ধাক্কায় দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়ার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষোভের আগুন ছড়ায় ওই এলাকায়। ঘাতক লরির চালককে নিজেদের হাতে তুলে নিতে চেয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন স্থানীয়রা। বিস্তারিত জানতে পড়ুন...

টাকার বদলে গাড়ির বেপরোয়া দৌরাত্ম্যে ছাড়,  সাতের খুদের মৃত্যুতে কাঠগড়ায় Traffic Police
বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা (নিজস্ব চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: সাত বছরের খুদে পড়ুয়া সৌরনীল সরকারের মৃত্যুতে শুক্রবার সকাল থেকে দফায় দফায় উত্তেজনায় বেহালায়। পুলিশ-জনতা সংঘর্ষে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় বেহালার ডায়মণ্ডহারবার রোড। দুর্ঘটনার পরই ৪টি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন উত্তেজিত জনতা। ভাঙচুর চালানো হয় একাধিক গাড়ি-বাসেও। এমনকি পুলিশের গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেয় ক্ষুদ্ধ জনতা। গোটা ঘটনায় এদিন সকাল থেকেই কার্যত থমথমে পরিস্থিতি বেহালার চৌরাস্তা এলাকা। দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বেহালা চত্বর। অফিস টাইমে বাড়ি থেকে কাজে বেরিয়ে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন নিত্যযাত্রীরা।  

জানা গিয়েছে, মাটি বোঝাই লরির ধাক্কায় দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়ার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষোভের আগুন ছড়ায় ওই এলাকায়। ঘাতক লরির চালককে নিজেদের হাতে তুলে নিতে চেয়ে পুলিশের সঙ্গে রীতিমত বচসায় জড়িয়ে পড়েন স্থানীয়রা। শুরু হয় খণ্ডযুদ্ধ! ২ ঘণ্টা ধরে পড়ুয়ার মৃতদেহ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে বাঁধে এলাকার বাসিন্দাদের। ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। উত্তেজনা আরও বেড়ে যায় পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করার পর। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে না পেরে দফায় দফায় লাঠিচার্জ করার পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসেল সেলও ছুড়তে থাকে পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের দাবি, মহিলা, শিশু সবাইকেই লাঠি দিয়ে মারা হচ্ছে। কোনও মহিলা পুলিশও এলাকায় নেই বলে দাবি মহিলাদের। স্কুলের সামনে কাঁদানে গ্যাসের সেল কেন ফাটানো হল, সেই প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। 

আরও জানা গিয়েছে, স্কুলের সামনে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানোয় অসুস্থ হয়ে পড়ে খুদে শিশু পড়ুয়ারা। গোটা ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় এসে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন অভিভাবকরাও। এই বিষয়ে এক মহিলা বলেন, ''জানেন এখানে একটা সার্জেন থাকে না। শুধু গাড়ি যাবে, টাকা নেবে আর পকেটে পুরবে। আমাদের সন্তানরা রাস্তা পার হয়। তাদের কথা কে ভাববে?'' ক্ষোভ উগরে দেন আরও এক অভিভাবক। তিনি বলেন, ''গিয়ে দেখুন প্রতিটি সরকারি স্কুলের সামনে নিরাপত্তা থাকে। এখানেই শুধু নেই।''

প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকাল সাড়ে ছ'টা নাগাদ বাবার সঙ্গে স্কুলের যাওয়ার সময় বেপরোয়া লরির ধাক্কায় প্রাণ হারায় ৭ বছরের খুদে পড়ুয়া সৌরনীল সরকার। চলতি অগাস্ট মাসের ২৫ তারিখই ছিল সৌরনীলের জন্মদিন। তার আগে এমন মর্মান্তিক ঘটনায় শোকের ছায়া সৌরনীলের পরিবার, পাড়ায় ও স্কুলে। গোটা ঘটনায় কার্যত ট্রাফিক অব্যবস্থাকেই দায়ী করেছেন স্থানীয়রা। তবে জানা গিয়েছে, ঘাতক লরিটি ও চালককে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের বাবলাতলা থেকে আটক করেছে হাওড়া ট্রাফিক পুলিশ। তুলে দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশের হাতে।