গ্রীষ্ম টু বর্ষা সব মরশুমে চুলের যত্ন নিতে মেনে চলুন এই টোটকা...

এখন অনেক কম বয়সী ছেলে মেয়েরাই চুল পড়ার সমস্যা ভুগছে। অল্প বয়সে মাথায় টাক পড়ে যাওয়ার মতো লজ্জাজনক আর কিছু হতে পারে না। চুল পড়ে যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট একটি কারণকে দায়ি করা যায় না।

গ্রীষ্ম টু বর্ষা সব মরশুমে চুলের যত্ন নিতে মেনে চলুন এই টোটকা...

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে নানারকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় আমাদের। সেটা শারীরিক হোক কিংবা মানসিক। তবে বর্তমানে চুল পড়ার সমস্যা নিয়ে জর্জরিত মহিলা-পুরুষ সকলেই। একটা সময় আমরা দেখেছি যে আমাদের দিদা-ঠাকুরমা তাদের শেষ বয়সে এসেও মাথা ভর্তি চুল নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন, আর যা এখন অনেকটা গল্পের মতো শোনায়। 

এখন অনেক কম বয়সী ছেলে মেয়েরাই চুল পড়ার সমস্যা ভুগছে। অল্প বয়সে মাথায় টাক পড়ে যাওয়ার মতো লজ্জাজনক আর কিছু হতে পারে না। চুল পড়ে যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট একটি কারণকে দায়ি করা যায় না। বিভিন্ন কারণে চুল পড়ে যেতে পারে, যেমন- পরিবেশ দূষণ, জলের সমস্যা, খাবারের সমস্যা, অতিরিক্ত কেমিক্যাল হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করা, শারীরিক অসুস্থতা ও চুলের সঠিক যত্ন না করা। কথা হল সমস্যা যেমন থাকে তেমন তার সমাধানও থাকে, আমাদের কেবল জানতে হয় সঠিক সমাধান প্রক্রিয়া ও প্রয়োগ।

তাহলে আসুন জেনে নিই কীভাবে সুস্থ সবল রাখবেন আপনার সাধের চুল। 

1. নারকেলের দুধ: নারকেলের দুধ চুলের জন্য একটি উচ্চমানের পুষ্টি উপাদান। যা মাথার ত্বক নারিশ করে চুলের গ্রোথ বাড়িয়ে তোলে। চুল পড়া রোধে আপনি নারকেল বেটে তার রস চুলের গোঁড়ায় ম্যাসাজ করলে চুল পড়া রোধ হয়। এটি চুল পড়া বন্ধ করার একটি অন্যতম সহজ ও কার্যকরী উপাদান।

2. অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরা জেল সরাসরি নিয়ে বা অ্যালোভেরা জুস বানিয়ে আপনি আপনার চুলের গোড়ায় লাগিয়ে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। এক থেকে দুই ঘণ্টা রেখে দিন পরে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। অ্যালোভেরার প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান মাথার ত্বক সুস্থ রাখে এবং ড্রাই মাথার ত্বক স্বাভাবিক করে। যার ফলে চুল পড়া প্রায় অনেকটাই কমে আসে।

3. অয়েল ম্যাসাজ: আজকাল অনেকেই চুলে তেল দেওয়া একদম পছন্দ করেন না। কিন্তু স্বাস্থ্যজ্জ্বল চুল ও চুল পড়া বন্ধ করতে তেলের বিকল্প হয় না। আপনি যদি প্রতিদিন সম্ভব না হলেও সপ্তাহে কমপক্ষে ৩দিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে হালকা গরম তেল দিয়ে আপনার মাথার ত্বকে ম্যসাজ করেন তাতে মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হয়ে চুল পড়া রোধ করে, চুলের বৃদ্ধি বাড়িয়ে তুলবে। এক্ষেত্রে নারকেল তেল সবচেয়ে ভালো কাজ করে। তবে আপনি চাইলে অলিভ অয়েল, জোজোবা, মাস্টারড, কাস্টার ও অ্যালমন্ড অয়েলও ব্যবহার করতে পারেন।


4. নিমপাতা: নিম গাছ হল প্রকৃতির এক অনন্য উপকারী এমন এক আশীর্বাদ যাতে প্রয়োজনীয় সব উপাদান স্তরে স্তরে সাজানো রয়েছে। এটিতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাংগাল, অ্যান্টি-ভাইরাল, অ্যান্টি-সেপটিক, অ্যান্টি-ডায়াবেটিক ও সেডাটিভ প্রাকৃতিকভাবেই বিদ্যমান। চুল পড়া কমাতে এই নিম পাতার কোনও তুলনা হয় না। আপনি নিমপাতা পরিমাণ মতো নিয়ে তাতে জল মিশিয়ে গরম করতে থাকুন। যতক্ষণ না জল কমে অর্ধেক আকার ধারণ করে। এবার এই জল ঠাণ্ডা করে আপনার মাথা ধুয়ে ফেলুন। প্রতি সপ্তাহে একবার এটি ব্যবহার করলেই আপার চুল পড়া কমে আসবে।

5. আমলা: কিছু শুকনো আমলা নিয়ে নারকেল তেলের মধ্যে দিয়ে গরম করতে থাকুন যতক্ষণ না তেল কালো হয়ে যায়। এবার এই তেল আপনার মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন দেখবেন চুল পড়া বন্ধ হবে। আবার আপনি চাইলে আমলা বেটে এর সঙ্গে শিকাকাই মিশিয়ে পেস্ট করে তা মাথায় লাগাতে পারেন, এটাও চুল পড়া কমাতে খুব কাজে দেয়।

6. গ্রিন টি: চুল পড়া রোধে আপনি নিশ্চিন্তে গ্রিন টি ব্যবহার করতে পারেন। দুইটি গ্রিন টি-ব্যাগ নিয়ে এক কাপ জলে ফুটিয়ে সেই জল ঠাণ্ডা করে মাথায় ও চুলে লাগান। এটি এক ঘণ্টা আপনার চুলে রেখে পরে ধুয়ে ফেলুন।


7. ভিটামিন-ই ক্যাপস্যুল: চুলের বিশেষ যত্নের জন্য চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী অলিভ অয়েল নিয়ে এতে ১টি ভিটামিন ই ক্যাপস্যুল ভেঙে নিন। এরপর একে হালকা গরম করে মাথার ত্বকে ভালোভাবে লাগান। ৩০ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন। সবচেয়ে ভালো ফলাফলের জন্য সারা রাত এই মিশ্রণটি মাথায় লাগিয়ে রেখে সকালে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২/৩ দিন ব্যবহার করুন এটি।

8. পেঁয়াজ: নতুন চুল গজাতে পেঁয়াজ খুবই উপকারী। যাদের চুল পড়ে যাচ্ছে তারা সপ্তাহে ২-৩ বার চুলে পেঁয়াজের রস ব্যবহার করতে পারেন।