শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে মাধ্যমিকে সফল মানসী

শুক্রবারই প্রকাশিত হয়েছে মাধ্যমিক ২০২৩-এর ফলাফল। জানা গিয়েছে, মানসী স্থানীয় শৌলমারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ে। প্রায় ৮০ শতাংশ শারীরিক অক্ষমতা নিয়ে এবার ২৩ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল সে।

শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে মাধ্যমিকে সফল মানসী

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: মনের ইচ্ছা আর অদম্য জেদ থাকলে যেকোনও লক্ষ্যই অনায়াসে পূরণ করা যায়। আর্থিক বা শারীরিক প্রতিবন্ধকতা যে কোনও বাধাই নয়, তা ফের প্রমাণ করে দিল মানসী। কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ ব্লকের রানীরহাট গ্রামপঞ্চায়েতের জোঠিয়ার বাসিন্দা মানসী বর্মা। জন্ম থেকেই বিশেষভাবে সক্ষম মানসী। শারীরিক অক্ষমতাকে জয় করে এবার মাধ্যমিকে ভালোভাবে পাশ করেছে সে। 

শুক্রবারই প্রকাশিত হয়েছে মাধ্যমিক ২০২৩-এর ফলাফল। জানা গিয়েছে, মানসী স্থানীয় শৌলমারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ে। প্রায় ৮০ শতাংশ শারীরিক অক্ষমতা নিয়ে এবার ২৩ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল সে। স্থানীয় আলোকঝাড়ি হাইস্কুলে সেন্টার পড়ে তার। বাকি পরীক্ষার্থীদের থেকে অনেকটাই ব্যতিক্রমী মানসী। এবারের  মাধ্যমিক  পরীক্ষায় ' পা দিয়ে ' লিখে পরীক্ষা দেয় সে। বিরল রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে হাঁটা চলা ও মুখে কথা বলতে পারলেও হাত দিয়ে কোনও কাজ করতে পুরোপুরি অক্ষম বছর ষোলোর এই মানসী। তাই ছোট থেকেই ' পা' দিয়ে লেখার কৌশল আয়ত্ত্ব করে সে।

জানা গিয়েছে, 'পা ' দিয়ে লেখার কারণে লেখার গতি অনেকটাই কম, সে কারণে রাজ্যের মাধ্যমিক শিক্ষা পরিষদের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ৪৫ মিনিট সময় বরাদ্দ করা হয়েছে মানসির জন্য। গতকালই নিয়ম মেনে রাজ্যের মাধ্যমিক শিক্ষা পরিষদের ফলাফল প্রকাশিত হয়। আর মাধ্যমিকের ফল বেরোতেই দেখা যায়, ভালো নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে সে। মানসীর এই সাফল্যে খুশি তার বাবা-মা ও শিক্ষিকারা। শুধু তাই নয়, আগামী দিনে শিক্ষিকা হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে মানসীর। 

প্রসঙ্গত, শুক্রবার ১৯ মে প্রকাশিত হয়েছে ২০২৩ সালের মাধ্যমিকের রেজাল্ট। ফলাফলের নিরিখে মেধা তালিকার প্রথম দশে রয়েছেন ১১৮ জন ছাত্রছাত্রী। এবছর পাশের হার ৮৬.১৫ শতাংশ ও প্রথম বিভাগে পাশ করেছে ১৩.৬৭ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী। এবছর পরীক্ষায় বসেছিল প্রায় ৭ লক্ষ পরীক্ষার্থী। তবে উল্লেখযোগ্য ভাবে মাধ্যমিকে অনুর্ত্তীণ হয়েছেন মোট ১ লক্ষ ছাত্রছাত্রী। তবে মাধ্যমিকে পাশের হারের নিরিখে প্রথম স্থানে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর। জেলায় জেলায় মাধ্যমিকের ফলাফলে জয়জয়াকার। দ্বিতীয় স্থানে কালিম্পং, তৃতীয় স্থানে কলকাতা ও চতুর্থস্থানে রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর। পাশের হারে কলকাতাকে টেক্কা দিয়ে এগিয়ে রয়েছে জেলাগুলি। শুধু তাই নয়, মাধ্যমিকে যুগ্মভাবে তৃতীয় স্থান দখল করেছে ৬ জন।