অনশন প্রত্যাহার মেডিক্যাল পড়ুয়াদের, ২২ ডিসেম্বর নির্বাচন

পড়ুয়াদের ছাত্রভোটের দাবিতে আন্দোলনকে মানতে নারাজ মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন কৌশিক সেন।

অনশন প্রত্যাহার মেডিক্যাল পড়ুয়াদের, ২২ ডিসেম্বর নির্বাচন

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: টানা ১২ দিন ধরে চলছিল অনশন। অবশেষে ১২ দিনের মাথায় অনশন প্রত্যাহার করল চিকিৎসারত পড়ুয়ারা।  নিজেদের দায়িত্বে নির্বাচন করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই, অনশন প্রত্যাহার করে পড়ুয়ারা। সোমবার এক নাগরিক মিছিলের শেষে অনশনকারী ছাত্রদের ফলের রস খাইয়ে অনশন তোলেন বিনায়ক সেন।

ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে অনড় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা। গত বৃহস্পতিবার থেকে এই দাবিতে তাঁরা অনশন শুরু করে। এদিকে চাপে পড়ে শেষপর্যন্ত মেডিক্যালে অনশন প্রত্যাহার পড়ুয়াদের। আগামী ২২ ডিসেম্বর ছাত্রদের পরিচালনায় হবে নির্বাচন, দাবি ছাত্রদের। এদিকে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক হতেই মঙ্গলবার থেকে নির্বাচনের সমস্ত প্রক্রিয়া তারা শুরু করবে বলে জানানো হয়েছে। সমাজের চারজন বিশিষ্ট নাগরিকের তত্ত্বাবধানে এই নির্বাচন হবে বলে দাবি ছাত্রদের। বিনায়ক সেন, বোলান গঙ্গোপাধ্যায়, সুজাত ভদ্র, আম্বিকেশ মহাপাত্রকে নিয়ে এই নির্বাচন সংগঠিত হবে। মোট চারটি বর্ষের আড়াইশো জন করে মোট ১০০০ জন ভোটার। সব মিলিয়ে প্রার্থী ২০ জন।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে ছাত্ররা এই মেডিক্যাল কলেজের ফাঁড়ি ও বউবাজার থানায় লিখিত আকারে নির্বাচনের বিষয়ে জানাবে। এছাড়াও কলেজ কর্তৃপক্ষকে মেল করে এবং লিখিত আকারে মঙ্গলবারের মধ্যে ২২ তারিখ নির্বাচনের বিষয়টি জানানো হবে ছাত্রদের তরফে। অন্যদিকে অপর্ণা সেনের পর এবার কৌশিক সেন। মেডিকেল কলেজে ছাত্রভোটের দাবিতে বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ালেন এই অভিনেতা-নাট্যকার। এক ভিডিও বার্তায় তিনি জানান, 'রাজনৈতিক দল বা মতবাদের তাঁবেদারি করছি না। আন্দোলনকারীদের পাশে আছি।'

পড়ুয়াদের ছাত্রভোটের দাবিতে আন্দোলনকে মানতে নারাজ মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন কৌশিক সেন। এদিকে গত ১২ দিন ধরে নির্বাচনের দাবিতে ছাত্ররা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। অনড় ছিলেন নিজেদের দাবিতে। অনশন চলাকালীন বেশ কিছু পড়ুয়া অসুস্থও হয়ে পড়েন। একাধিকবার কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক হলেও সেখান থেকে কোনও উত্তর উঠে আসেনি। স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী এসে কথা বললেও মেটেনি সমস্যা। শেষ বৈঠকের পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। বৈঠকের মাঝপথ থেকে বেড়িয়ে যান অধ্যক্ষ। তারপর স্বাস্থ্যভবনেও একাধিক বৈঠক হয়। অবশেষে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ নাগাদ সেই অনশন তাঁরা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।

অন্যদিকে এবার, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়ুয়াদের জন্য জেলার মেডিক্যাল কলেজগুলিতে আসন সংখ্যা বাড়াচ্ছে রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, বিভিন্ন জেলার ৫টি মেডিক্যালে কলেজে মোট ২৫০টি আসন বাড়ানো হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য দফতরে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাঁচটি কলেজের মধ্যে রয়েছে ডায়মন্ড হারবার, রামপুরহাট, পুরুলিয়া, কোচবিহার ও রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ।

জানা গিয়েছে, প্রতিটি কলেজে এমবিবিএস-এর ৫০টি করে আসন বাড়াতে স্বাস্থ্য দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই মেডিক্যাল কলেজগুলিতে বর্তমানে ১০০টি করে আসন রয়েছে। তা বাড়িয়ে ১৫০ করার কথা বলা হয়েছে।