ছন্দে ফিরছে আরজি কর! কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ জুনিয়র চিকিৎসকদের

সরকারি হাসপাতালের রোগীদের স্বার্থ দেখার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। তাই শেষ পর্যন্ত সর্বসম্মত ভাবেই কর্মবিরতি আংশিক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জুনিয়র চিকিৎসকদের। জানুন বিস্তারিত...

ছন্দে ফিরছে আরজি কর! কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ জুনিয়র চিকিৎসকদের
file image

ট্রাইব টিভি বাংলা ডিজিটাল: দীর্ঘ কর্মবিরতির ইতি। ৪২ দিন পর অবশেষে কাজে ফিরলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা। শনিবার সকাল ৮টা থেকে প্রতিশ্রুতি মতো আপাতত জরুরি পরিষেবায় যোগ দিলেন তাঁরা। তবে এখনই আউটডোর পরিষেবাতে ফিরছেন না জুনিয়র চিকিৎসকরা। সেখানে ভরসা সিনিয়র ডাক্তাররাই। রাজ্য সরকার কয়েকটি শর্ত মানলে তবে আউটডোরে (OPD) ফের কাজে ফিরবেন বলেই জানিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তবে কি এবার ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরতে চলেছে আরজি কর হাসপাতাল?  

খাস কলকাতার প্রথম সারির খ্যাতনামা সরকারি হাসপাতাল আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল (RG Kar Medical College and Hospital)। সেখানে ৩০ বছর বয়সী কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় স্তিমিত করে দিয়েছে শহরের পুজোর আমেজকেও। আন্দোলন-রাত দখল-মিছিল-ধর্নায় কার্যত কলকাতা হয়ে উঠেছে প্রতিবাদের শহর। দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে কর্মবিরতি জুনিয়র চিকিৎসকদের। তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে পথেও নেমেছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/Durga-Puja-was-celebrated-at-the-Sarkar-Bari-in-Kaichar-village-of-East-Burdwan-district

কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের (Vineet Goyal) পদত্যাগের দাবিতে শিরদাঁড়া নিয়ে লালবাজার অভিযান করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। পুলিশের 'লৌহ কপাটে'র সামনেও মেরুদণ্ড সোজা রেখে নিজেদের দাবিতে অনড় থেকে সারারাত ফিয়ার্স লেনে বসে থেকেছেন তাঁরা। ২২ ঘণ্টা অবস্থানের পর জুনিয়র চিকিৎসকদের শিরদাঁড়ার সামনে নতি স্বীকার করে পুলিশ। লালবাজারে প্রবেশ করে কলকাতা পুলিশ কমিশনার (Police Commissioner Of Kolkata) পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পাশাপাশি প্রতীকী শিরদাঁড়াও বিনীত গোয়েলের হাতে তুলে দেন আন্দোলনকারীরা। এখানেও থামেনি আন্দোলন।   

দীর্ঘ ১১ দিন ধরে ৫ দফা দাবিতে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থানে বসেন জুনিয়র চিকিৎসকরা (Junior Doctors)। কখনও প্রখর রোদ আবার কখনও ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি, কিছুই দমাতে পারেনি তাঁদের। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সাধারণ মানুষ। মেল- পাল্টা ইমেলের পর দীর্ঘ টানাপোড়েনের বৈঠক। মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন কালীঘাটে (Kalighat) বৈঠকের পর নবান্নে বৈঠক, সহমত-দ্বন্দ্বের নানা বাঁক ঘুরে অবশেষে উঠল ডাক্তারদের আন্দোলন। 

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/Junior-doctors-from-different-medical-colleges-are-going-to-the-flood-affected-areas-of-South-Bengal

জুনিয়র চিকিৎসকদের লাগাতার আন্দোলনের চাপে তাঁদের দাবি মানতে বাধ্য হয়েছে রাজ্য সরকার। দফায় দফায় বৈঠক, আলোচনার পরে ডাক্তারদের ৫টি দাবির মধ্যে ৩টি দাবি মেনে নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কলকাতা পুলিশ কমিশনার পদ থেকে সরানো হয় বিনীত গোয়েলকেও। সে অর্থে আন্দোলনকারীদের ‘বড় মাপের জয়’ হয়েছে বলেই মনে করছে একাংশ। সরকারি হাসপাতালের রোগীদের স্বার্থ দেখার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। তাই শেষ পর্যন্ত সর্বসম্মত ভাবেই কর্মবিরতি আংশিক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জুনিয়র চিকিৎসকদের।

তবে আন্দোলনকারীরা রাজ্য সরকারকে (West Bengal Government) দিয়ে রেখেছেন ৭ দিনের ডেডলাইন। সমস্ত দাবি পূরণ না হলে ফের পূর্ণ কর্মবিরতিতে ফেরার হুঁশিয়ারি আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের। কিন্তু কৌতূহল রয়ে যাচ্ছে যে, এই দফার শেষ থেকে কি নতুন শুরুর বীজ বোনা হবে? তেমন হলে সেই আন্দোলন কি এ বারের মতোই ‘ঐক্যবদ্ধ’ থাকবে? উত্তর দেবে সময়ের কাঁটা।