প্রার্থী বাছাইয়ে একতরফা মনোভাব, বামেদের উপর ক্ষুদ্ধ কংগ্রেস

একতরফা কয়েকটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দেওয়ায় সিপিএমমের উপর ক্ষুব্ধ বিধানভবন। বারাকপুর, বসিরহাট ও মথুরাপুর এই তিন আসনে সিপিএম তাদের প্রার্থী ঘোষণা করে দেওয়ায় কংগ্রেসের বড় অংশ ক্ষুব্ধ আলিমুদ্দিনের উপর। জানুন বিস্তারিত...

প্রার্থী বাছাইয়ে একতরফা মনোভাব, বামেদের উপর ক্ষুদ্ধ কংগ্রেস
(ফাইল চিত্র)

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: এক তরফাভাবে কয়েকটি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দেওয়ায় কংগ্রেসের একাংশের ক্ষোভের মুখে পড়েছে সিপিএম। অন্যদিকে, কংগ্রেস প্রীতি দেখাতে গিয়ে বামফ্রন্টের শরিকদেরও ক্ষোভের মুখে সিপিএম নেতৃত্ব। হাত ধরতে গিয়ে ঘরেবাইরে জোড়া ফলায় বিদ্ধ হতে হচ্ছে সিপিএমকে। ফরওয়ার্ড ব্লককে না করে পুরুলিয়ায় বামফ্রন্টের জোটধর্ম ভেঙে কংগ্রেসকে সমর্থন করার কথা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে বিমান বসু। আর তাতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে আজ কংগ্রেস প্রেম নিয়ে সিপিএমকে তুলোধোনা করার পাশাপাশি পুরুলিয়ায় আলাদা লড়ার কথা ঘোষণা করে সোমবার দলের রাজ্য দফতর হেমন্ত বসু ভবন থেকে সেখানে দলের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়। যা স্বাভাবিকভাবেই ভোটের আগে বিড়ম্বনায় ফেলতে চলেছে আলিমুদ্দিনকে। 

অন্যদিকে, একতরফা কয়েকটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দেওয়ায় সিপিএমমের উপর ক্ষুব্ধ বিধানভবন। বারাকপুর, বসিরহাট ও মথুরাপুর এই তিন আসনে সিপিএম তাদের প্রার্থী ঘোষণা করে দেওয়ায় কংগ্রেসের বড় অংশ ক্ষুব্ধ আলিমুদ্দিনের উপর। কংগ্রেসের ওই অংশের দাবি, কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই এই আসনগুলোতে এককভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেছে সিপিএম নেতৃত্ব। জোট আলোচনায় এই বারাকপুর, বসিরহাট ও মথুরাপুর আসনের দাবিদার ছিল কংগ্রেস। ফলে জোটে জট আরও পেকেছে।  কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে অশান্তির মেঘ তৈরি হয়েছে। মথুরাপুর আসনে রাজ‌্য কংগ্রেস লড়বে এ সিদ্ধান্ত অনেক আগেই হয়েছে। দিল্লিতে নির্বাচনী কমিটি থেকে তাতে সিলমোহরও পড়ে গিয়েছে। এআইসিসি—র তরফে খুব শীঘ্রই মথুরাপুর আসনে প্রার্থীর নামও ঘোষণা করার কথা রয়েছে। 

সোমবার বিধানভবনে লোকসভা ভোট নিয়ে বৈঠকে করেছেন প্রদেশ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক গোলাম আহমেদ মীর। সূত্রের খবর, এই বৈঠকে সিপিএমের একতরফা প্রার্থী দেওয়ার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্বের বড় অংশ। সূত্র আরও বলছে, মথুরাপুর আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী হতে পারেন মনোরঞ্জন হালদার। এখনও পর্যন্ত রাজ্যের দশটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। রবিবার আরও তিনটি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসকে সিপিএম ১২টি আসন ছাড়ার কথা বললেও কংগ্রেসের মধ্যে থেকে দাবি উঠেছে, গোটা পনেরো আসনে প্রার্থী দিক দল। রবিবার কংগ্রেসের তরফে এ রাজ্যে আরও তিনটি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। 

আরও পড়ুন: https://www.tribetv.in/Know-the-some-top-spicy-recipes-to-add-your-tea-helps-immunity-boosting

উলুবেড়িয়া, ঘাটাল ও বনগাঁ আসনে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। ঘাটালে বামফ্রন্ট সমর্থিত সিপিআইয়ের প্রার্থী থাকা সত্বেও কংগ্রেস সেখানে ফের প্রার্থী দেওয়ায় জোটে ফের জট দেখা দিল। কংগ্রেসের একাংশ সিপিএমের প্রতি আরও ক্ষুব্ধ। কারণ, দুর্বল আসনগুলো কংগ্রেসকে ছাড়ছে সিপিএম। আইএসএফের সঙ্গে জোট ভেস্তে যাওয়ায় কমপক্ষে পনেরোটি আসন চাইছে কংগ্রেস। কিন্তু বামেরা ইতিমধ্যেই ২৯টি আসনে তাদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দিয়েছে। কিন্তু বামেদের তালিকায় থাকা জয়নগর আসনে এখনও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেননি বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। এই জয়নগর আসনটি ফ্রন্ট আরএসপির ভাগের। 

আরও পড়ুন: https://www.tribetv.in/Know-the-benefits-of-allergy-remedy-can-help-treat-lung-cancer

আরএসপি নেতৃত্বের  বক্তব্য, জয়নগরে আমাদের প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত। কিন্তু কেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান ঘোষণা করছেন না, তা নিয়ে আমরা অন্ধকারে। ফরওয়ার্ড ব্লকের মতো প্রকাশ্যে সরব না হলেও সিপিএমের কংগ্রেস প্রীতি নিয়ে ভিতরে ভিতরে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ আরএসপি ও সিপিআই নেতারা। জোটের স্বার্থে ভাগের তিনটি আসনের দাবি ছেড়ে দু’টি আসনে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে সিপিআইকে। এখন আরএসপিকেও যদি বালুরঘাট ও আলিপুরদুয়ার নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে বলা হয় সিপিএমের তরফে তাহলে নতুন করে ফের শরিকি গন্ডগোল বাঁধতেপারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, মথুরাপুর সিপিএম নিয়ে জয়নগর আসনটি তারা কংগ্রেসকে ছাড়তে পারে। তবে সেক্ষেত্রে যে বাধা হয়ে দাঁড়াবে আরএসপি তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অথবা, কোচবিহারে বাম প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও সেখানে লড়ছে কংগ্রেস। মথুরাপুরেও বাম প্রার্থী দেওয়া সত্ত্বেও সেখানে কংগ্রেস যদি প্রার্থী ঘোষণা করে তাহলে কোচবিহারের মতো এই আসনেও জোট হবে না। একাই লড়বে কংগ্রেস। ফলে মহা ফ্যাসাদে পড়েছে সিপিএম। জোট নিয়ে বামফ্রন্টের মধ্যেও ক্ষোভ আর কংগ্রেসের সঙ্গেও মনোমালিন্য দেখা দিয়েছে।