বাবার বয়স ৪৫ কিন্তু ছেলের ১২৯! আধারের ভুলে অথৈ জলে সুব্রত

যেকোনও কিছু আবেদনের সঙ্গে একাধিক প্রমাণপত্র দেওয়া হয়। তবুও তাদের কি কারণে যে ভুল হয়, তা জানা নেই!

বাবার বয়স ৪৫ কিন্তু ছেলের ১২৯! আধারের ভুলে অথৈ জলে সুব্রত

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: বাবার বয়স ৪৫, মায়ের ৪০। কিন্তু ছেলের বয়স ১২৯। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। আর এই ১২৯ বছরের ছেলেকে নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন মা। 
নদীয়ার জেলার শান্তিপুর বাবলা এলাকার বাসিন্দা সাধন কর্মকার। কর্মসূত্রে থাকেন মুম্বইতে। এতদিন তাঁর দুই ছেলে এবং স্ত্রীও থাকতেন সেখানেই। যদিও তাঁদের যাবতীয় প্রমাণপত্র সবই শান্তিপুরের ঠিকানার।

জানা গিয়েছে, ২০২২ সালের মার্চে মুম্বই থেকে ছেলেকে নিয়ে বাবলা গোবিন্দপুরে নিজের শ্বশুর বাড়িতে ফিরে আসেন সাধন কর্মকারের স্ত্রী শ্রাবণী কর্মকার।  উদ্দেশ্য ছিলো, তার নিজের আধার কার্ডে থাকা শর্বরী কর্মকার নাম পাল্টাতে, ছোট ছেলে সুব্রতর নাম ভুল করে সুকান্ত করে দেওয়া পাল্টাতে। সঙ্গে স্বামীর রেশন কার্ডে ঠিকানার ভ্রম সংশোধন করাতে।  

স্বল্প রোজগারের সাধন বাবুর সাথে থাকা দুই ছেলে নিয়ে বোম্বেতে সংসার খরচ, অন্যদিকে স্ত্রী শ্রাবণী দেবীর গোবিন্দপুরে থাকার খরচ। রীতিমতো দশটা পাঁচটায় ডিউটি করার মতো, সপ্তাহে বেশিরভাগ দিনই বিডিও অফিস , রেশন দপ্তর, এ- অফিস, ও -অফিস গিয়ে থাকেন। 
তবে সেই কাজ মিটতে না মিটতেই, সদ্য আবেদন করা বড় ছেলের রেশন কার্ড নিয়ে আবারও বিভ্রান্তিতে। বয়স দেখলে চোখের চড়ক গাছ হবে, আপনারও। ২০০৯ সালে জন্মগ্রহণ করা ছেলের রেশন কার্ডের ডেট অফ বার্থ হিসাবে লেখা হয়েছে ১৯০০ সাল। অর্থাৎ ১৩ বছরের ছেলের বয়স কিনা ১২৯ বছর! আজ এই কাগজ কাল সেই কাগজ, অফিস সে অফিস ঘুরতে ঘুরতে কেটে গেছে আরও চারটা মাস। অর্থাৎ পরিবারের আধার কার্ড এবং রেশন কার্ড সংক্রান্ত ভ্রম সংশোধন করতে, প্রায় বছরখানেক ধরে স্বামী পুত্রদের ছেড়ে একাকী বসবাস শ্রাবণী দেবীর। 

তিনি বলেন,  ''যেকোনও কিছু আবেদনের সঙ্গে একাধিক প্রমাণপত্র দেওয়া হয়। তবুও তাদের কি কারণে যে ভুল হয়, তা জানা নেই।''  প্রতিবেশীরা বলেন, ''এ সমস্যা তাদেরও, কাউন্টারের ওপাশে কম্পিউটার নিয়ে থাকা মানুষটিও বোধ হয় রক্ত মাংসের নয়! কিছু দেখাশোনার আগেই , কিবোর্ডের উপর ঝড় তুলেই বলেন, পরের জন।'' আর সেখানে তিনি যে কি লিখলেন, তা একমাত্র জানেন তিনিই। কিন্তু তাদের কাছে এই, সামান্য ভুল যে  মানুষের কত অর্থ সময় এবং দুর্ভোগ বাড়াতে পারে সে ধারণা হয়তো তাদের নেই বলে আক্ষেপ সুর শোনা গিয়েছে শ্রাবণী কর্মকারের গলায়!