রুপোর পাখার বাতাস-রুপোর ঝাঁটায় রাস্তা সাফ, শিবকে বার্তা পাঠাতে নিরঞ্জনের পর আজও নীলকণ্ঠ ওড়ান রায়চৌধুরীরা

সরকারিভাবে নীলকণ্ঠ পাখি ধরা ও দুর্গা ঠাকুর বিসর্জনের পর তা ওড়ানোর উপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, আজও এটাই প্রধান বিশেষত্ব এই বনেদি বাড়ির পুজোর। শুরু হয়েছে তারই প্রস্তুতি। জানুন বিস্তারিত...

রুপোর পাখার বাতাস-রুপোর ঝাঁটায় রাস্তা সাফ, শিবকে বার্তা পাঠাতে নিরঞ্জনের পর আজও নীলকণ্ঠ ওড়ান রায়চৌধুরীরা
দশমীতে নীলকণ্ঠ ওড়ান রায়চৌধুরীরা

গোপাল শীল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: কথায় বলে শাল ছিঁড়লেও শালের মর্যাদা যায় না। তেমনই জমিদারী না থাকলেও ৩০৪ বছরের জমিদারী প্রথার কোনও বিলুপ্তি হয়নি। জমিদারী না থাকলেও, কোনও অংশে বনেদিয়ানাতে খামতি নেই বারুইপুরের রায়চৌধুরী বাড়ির দুর্গাপুজোয়। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অন্যতম পুরনো পুজো এটি। ব্রিটিশ শাসক লর্ড কর্নওয়ালিসের আমলে জমিদারীর পতন হয় রায়চৌধুরীদের। সেই থেকেই শুরু হওয়া দুর্গাপুজো নিজস্ব জৌলুস নিয়ে আজও অমলিন। সরকারিভাবে নীলকণ্ঠ পাখি ধরা ও দুর্গা ঠাকুর বিসর্জনের পর তা ওড়ানোর উপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, আজও এটাই প্রধান বিশেষত্ব এই বনেদি বাড়ির পুজোর। শুরু হয়েছে তারই প্রস্তুতি। 

প্রতি বছর দশমীতেই প্রতিমা বিসর্জন হয়। রায়চৌধুরী বাড়ির প্রতিমা বিসর্জন হওয়ার পর এলাকার বাকি প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়। যদিও জমিদার বাড়ির ধ্বংসস্তূপ দাঁড়িয়ে রয়েছ,  নেই কোন জৌলুশ। তা সত্ত্বেও রুপোর পাখা দিয়ে দেবীকে হাওয়া দিতে-দিতে এবং রুপোর ঝাড়ু দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করতে-করতে প্রতিমা নিরঞ্জনের পথে নিয়ে যাওয়া হয়। 

আরও পড়ুন: https://www.tribetv.in/know-the-historical-story-of-jhargram-chilkigarh-popular-kanak-durga-puja

দশমীতে বিসর্জনের পর নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ালে, সে গিয়ে কৈলাসে শিবকে খবর দেবে দেবী দুর্গা মর্ত্য ছেড়ে কৈলাসের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। এই বিশ্বাস থেকে আজও বিসর্জনের পর বারুইপুরের আদি গঙ্গার সদাব্রত ঘাট থেকে নীলকণ্ঠ পাখি উড়িয়ে আসছে রায়চৌধুরীরা। তার রীতি ঐতিহ্য কোনদিন নষ্ট হয়নি। 

এ বিষয়ে রায়চৌধুরী পরিবারের অমিয় রায়চৌধুরী বলেন, এই রীতিনীতি ৩০০ বছরের বেশি পদার্পণ করেছে। এ বছরে ২০২৪ সাল কাটিয়ে উঠতে আর কিছুদিন বাকি, তার মধ্যে দেবী মায়ের আগমন। সেই আগমনে একটুও খামতি থাকবে না তার রীতিনীতি-রেওয়াজের। তাছাড়া সপ্তমী, অষ্টমী ,নবমী, তিথিতে দেবীর সামনে বলি প্রথা প্রচলিত আছে। তিন দিন তিনটে পাঁঠা দেবীর সামনে বলি দেওয়া হয়। হাজার হাজার মানুষ এই পূজার জন্য অপেক্ষা করে। তৈরি হচ্ছে বাড়ির মধ্যে প্রতিমা। সেজে উঠছে জমিদার বাড়ির আশপাশ।