ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা শূন্য, বিদ্যালয়ে চলছে দু'বছর ধরে!

পড়ুয়া না থাকলেও শিক্ষক-শিক্ষিকারা সবাই নিয়মমাফিক বিদ্যালয়ে আসেন এবং ছুটির সময় হলে বাড়ি যান, এভাবেই চলছে বর্তমানে।

ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা শূন্য,  বিদ্যালয়ে চলছে দু'বছর ধরে!

ট্রাইব টিভি ডিজিটাল: "আসি যাই মাইনে পাই'! ' বেশ কয়েকটি সরকারি দফতরের কতিপয় কর্মচারীদের প্রসঙ্গে এই ব্যাঙ্গাত্বক উক্তি শোনা যায় প্রায়শই। নদীয়ার চর মাজদিয়া গভমেন্ট কলোনি জুনিয়র হাইস্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সেই পরিস্থিতির জন্য দায়ি তাঁরা নন। বরং শিক্ষক-শিক্ষিকা হিসেবে ছাত্র-ছাত্রীদের না পেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছেন তাঁরা।

২০০৯ সালে মাত্র ২৫ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এই বিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছিল। প্রত্যন্ত গ্রামের শেষ প্রান্তে, এবং পার্শ্ববর্তী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থাকার কারণে এই বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা বরাবরই খুবই কম। তবে করোনা পরিস্থিতে দীর্ঘ দিন বাদে বিদ্যালয় খোলার পরেও ২০২১ -২২ শিক্ষাবর্ষে নতুন কোনও ছাত্র-ছাত্রীকে ভর্তি করানো তো দূরে থাক, যারা এই বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতো তাদেরকেও তাদের অভিভাবকরা নিয়ে অন্যত্র ভর্তি করেছেন। 

জানা গিয়েছে, পড়ুয়া না থাকলেও শিক্ষক-শিক্ষিকারা সবাই নিয়মমাফিক বিদ্যালয়ে আসেন এবং ছুটির সময় হলে বাড়ি যান, এভাবেই চলছে বর্তমানে। ছাত্র-ছাত্রী না থাকায় মিড-ডে মিলও বন্ধ। তবে অফিসিয়াল কিছু কাজকর্ম , নিয়মমাফিক করে থাকেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। কিন্তু যে বিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যাই শূন্য, সেখানে কাজকর্ম কতই বা আর থাকে।
ফলে একপ্রকার, বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের কোলাহল শূন্য ফাঁকা ঘরেই নির্বাসনে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের। 

শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানান, এ বিষয়ে গ্রামের পঞ্চায়েত থেকে অভিভাবক চেষ্টা করেও মেলেনি ফল। দুঃখের কথা অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে জানালে তিনি জেলা পরিদর্শককে জানিয়েছেন এর বেশি আর কিছু নয়। অন্য বিদ্যালয়ে থেকে এই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে আসা অথবা এই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অন্য বিদ্যালয়ের স্থানান্তরণ সবটাই বিশবাঁও জলে। 

এর কারণ হিসেবে বিদ্যালয়ের সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক থাকার কারণে সকলেই পঞ্চম শ্রেণী থেকেই সেখানে ভর্তি হয়, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার জন্য কেউই রাজি হয় না এই বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে। সচেতন অভিভাবক যদিও বা সামান্য কিছু আছেন, তারাও পুনরায় শূন্য থেকে শুরু করে বিদ্যালয়ে ভাষাতে নিজেদের ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যৎ বিসর্জন দিতে চাইছেন না। তবে সরকারি উদ্যোগ এবং সদিচ্ছা নেই বলেই এই অবস্থা বলে তারা মনে করেন।