সংরক্ষিত মাটির পাটে এখানে পূজিত হন মা দূুর্গা, দেওয়া হয় কাঁচা ভোগ

পাশাপাশি কাদা খেলা হয়। রান্না করা ভোগ অষ্টমী দিন দেওয়া হয়। আর অন্য দিন গুলি কাচা ভোগ দেওয়া হয়। মশলা, চাল, দেওয়া হয়। দশমীর দিন শুক্ত মাছ ভাত খাইয়ে বরণ করা হয়।

সংরক্ষিত মাটির পাটে এখানে পূজিত হন মা দূুর্গা,  দেওয়া হয় কাঁচা ভোগ
রানাঘাটের ঘোষ বাড়ির দুর্গা পুজো।।

মলয় দে, নদীয়া: ২৯ প্রজন্ম ধরে সংরক্ষিত মাটি পাটে লাগিয়ে আজও পূজিত হয় অবিভক্ত বাংলার একেবারে প্রথমের দিকের রানাঘাটের ঘোষ বাড়ির পুজো। রানাঘাট শুধু নয় নদিয়ার প্রাচীন পুজোর  মধ্যে অন্যতম ঘোষ বাড়ির এই দুর্গাপুজো। তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার তৃতীয় কিংবা চতুর্থ দুর্গাপুজো এটি এমনটাই দাবি করেন অনেকে। ১৫২০ খিস্টাব্ধ চৈতন্য চরণ ঘোষ তিনি হুগলি জেলা আকনা থেকে এখানে আসেন। ব্রম্ভডাঙ্গা যা পরে রানাঘাট নাম হয়। সেখানেই এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। এবং দুর্গা পুজোর সূচনা করেন। চৈতন্য চরণ ঘোষ নিঃসন্তান ছিলেন। তিনি মারা যাওয়ার পর তার ছোট ভাই মকারন্ধ ঘোষের বংশধররা দুর্গা পুজো করে আসছেন। সেই থেকে বংশপরম্পরায় হয়ে আসছে উমার আরাধনা।   

বর্তমানে ২৯ তম বংশ পরম্পরায় এই পুজো হচ্ছে। এই বংশের ২৯ তম বংশধর রণজিৎ ঘোষ বলেন, ''দুর্গা পুজো শুরুর সময় যে মাটি দিয়ে পাটা তৈরি হয়েছিল। সেই মাটি দিয়ে আজও পাটা তৈরি হয়ে আসছে। ওই মাটির থেকে তুলে রাখা হয় কিছু মাটি। সেই মাটির সঙ্গে নতুন মাটি দিয়ে পাটা তৈরি হয়। বছরের পর বছর এই ভাবেই চলে আসছে। এই ভাবে হয়ে আসছে দেবী মূর্তি।৫০৪ বছর ধরে হয়ে আসছে এই পূজো। একটা সময় ৫১টি পাঠা ও মোষ বলি হতো ১৯৩৪সালে পাঠা বলি বন্ধ হয়ে যায় স্বপ্নাদেশে। এবং ঘোষ বংশের রামগোপাল ঘোষ মারা যান। ক্ষয়ক্ষতি হয় তার পর থেকে আর বলি হয়নি বন্ধ হয়ে যায়। 

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/A-Housewife-made-a-Durga-structure-by-sugarcane-at-Bankura

পঞ্চমীতে বোধন শুরু হয় ষষ্ঠীতে নয়। তারপর অধিবাসের সময় রক্ষা প্রদীপ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। প্রদীপ জ্বালান এই বংশের পুরুষ সেই প্রদীপ নেবে না। বিসর্জন হয়ে গেলে পাঠ ভেঙে সেইরক্ষা প্রদীপের থেকে প্রদীপ জ্বালিয়ে বাড়ির বিভিন্ন ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় । সেই প্রদীপের আলোতে ১০৮বার দুর্গা নাম লেখা হয় কলাপাতার ওপর লেখা হয় তারপর চূর্ণী নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয় নয় তো তুলসী তলায় দেওয়া হয়। এরপর মুড়ি মুড়কি, পকান্ন দেওয়া হয়। নবমীর দিন থোর ও মোচার ভোগ দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: https://tribetv.in/Panchayat-head-has-been-accused-of-hiding-government-relief

পাশাপাশি কাদা খেলা হয়। রান্না করা ভোগ অষ্টমী দিন দেওয়া হয়। আর অন্য দিন গুলি কাঁচা ভোগ দেওয়া হয়। মশলা, চাল, দেওয়া হয়। দশমীর দিন শুক্ত মাছ ভাত খাইয়ে বরণ করা হয়। ওই দিন টাটকা ফুলে পূজো হয়না বাশি ফুলে পূজো হয়। এই প্রাচীন পূজো দেখতে তাই দূরদূরান্ত থেকে মানুষ দেখতে আসেন পাশাপাশি এইখানে পুজো ও অঞ্জলি দেন অনেকে। রানাঘাটের ঘোষ বাড়ির পুজো আজও তার ঐতিজ্য বহন করে চলেছে।